গাংনীতে ট্রান্সফর্মার চুরি কৃষকরা দিশেহারা

রকিবুল ইসলাম রকি : মেহেরপুরের গাংনীতে তিনটি ট্রান্সফর্মার চুরির ঘটনায় চাষিরা আবাদ নিয়ে পড়েছে দুশ্চিন্তায়।


রবিবার রাতে উপজেলার দেবীপুর ভিটাপাড়া ইসহাকের ডিপের মাঠে  এই ঘটনা ঘটে।



বৈদ্যুতিক সেচ পাম্পের  মালিক হবিবর রহমান জানান,মাঠে পরিপূর্ণ আমনের আবাদ চলছে।এই মুহূর্তে চুরির ঘটনায় আমন ধান নিয়ে খুব সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। আর এ সময় ধানে পানি না দিলে ধানের চিটা পড়ে যাবে।এতে কৃষকের বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন এবং ফলনেও শঙ্কা দেখা দেবে।ট্রান্সফর্মারের দামও অনেক বেশি।এই মুহূর্তে আমাদের কেনা সম্ভব না। যদি দ্রুত এই ট্রান্সফর্মারের ব্যবস্থা না করা হয় তাহলে অনেক চাষী ক্ষতির মধ্যে পড়বে। 


বৈদ্যুতিক সেচ পাম্পের মালিক মনিরুল ইসলামের ছেলে আকাশ আহমেদ জানান,গতকাল সন্ধ্যার সময় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে দেখে গিয়েছি তখনো ট্রান্সফর্মারটি ছিল।সকালে এসে দেখি চুরি হয়ে গেছে।আমার স্কিমে অনেকের আমন ধান সহ বিভিন্ন আবাদ রয়েছে।  এছাড়াও বিভিন্ন সবজি ফসলও করছে।এসব ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে যদি দ্রুত ট্রান্সফর্মার ঠিক না করা যায়।সন্ধ্যার পর দীর্ঘ সময় কারেন্ট না থাকার সময় তারা এসব চুরি করে নিয়ে যায়। 




আমন চাষি ফনিরুল ইসলাম জানান,আমার আড়াই বিঘা জমিতে ধানের আবাদ রয়েছে।এ মুহূর্তে ধানের সেচ দিতে না পারলে ধানের খুব ক্ষতি হবে।এখনো আমার ধানে দশটা সেচ দিতে হবে।ধানের সেচ দিতে না পারলে ধান চিটা হয়ে যাবে।আর এতে ধানের ফলন কমে যাবে।


ধান চাষি নবিছউদ্দিন জানান,গতকাল সন্ধ্যার পরে বিদ্যুৎ চলে যায়।দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না আসায় চোরেরা এই সুযোগে ট্রান্সফর্মার গুলো চুরি করে নিয়ে যায়।এর মধ্যে যে মূল্যবান পিতল ছিল সেগুলো নিয়ে যায় আর ঠোসগুলো ফেলে যায়।আমি আমার ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি। 



বৈদ্যুতিক সেচ পাম্পের মালিক হবিবর রহমানের বড় ছেলে আব্দুস সালাম জানান,তিনটি ডিপের স্কিমে প্রায় তিন’শ বিঘা জমির আবাদ রয়েছে। যদি মেশিনের মাধ্যমে আবাদ করতে হয় তাহলে তেলের দাম অনেক বেশি, খরচ অনেক বেড়ে যাবে। তাতে জীবন জীবিকা নির্বাহ করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে। প্রশাসন এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা এবং ভবিষ্যতে যেন এ-ই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সেটা নিশ্চিত করার অনুরোধ করছি।



দেবীপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক  আব্দুল গনি জানান,ট্রান্সফর্মার চুরি হওয়ার কারণে ধান চাষিরা সকালে ধানে সেচ দিতে পারেনি।তিনটি সেচ পাম্পের আওতায় প্রায় ৩০০ বিঘা আবাদ রয়েছে। এর মধ্যে আমন ধান সহ বিভিন্ন ফসল রয়েছে।আবাদ গুলোতে প্রতিনিয়ত সেচ দেওয়া লাগে। তাই দ্রুত ট্রান্সফর্মারের ব্যবস্থা না করা হলে কৃষকরা বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়বে।



বামন্দী সাব-জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার(ও এন্ড এম) মোঃ হানিফ রেজা জানান,ট্রান্সফর্মার চুরির বিষয়টি খুব দুঃখজনক।আমরা যত দ্রুত সম্ভব বিষয়টি সমাধান করব। চাষীদের যাতে কৃষি খাতে কোন সমস্যা না হয়।তাই বিষয়টি খুব গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।


বামন্দী পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ ইসরাফিল হোসেন জানান,ট্রান্সফর্মার চুরির খবর শুনেছি তবে এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি


শেয়ার করুন