সরেজমিন ঘুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে মাঠ জুড়ে রয়েছে সোনালী ধান।ধান পেকে ধারণ করছে সোনালী রং। চাষিরা সকাল থেকে কাস্তে-দড়ি হাতে বেরিয়ে পড়েছে ধান কাটতে।মৃদু রোদ, হালকা বাতাসে মনের সুখে গান গাইছে তারা।আর গানের তালে তালে একে অপরের সাথে পাল্লা দিয়ে কাজ করে চলেছে। কেউ কাটছেন, কেউ বাঁধছেন, আবার কেউ আটি বেঁধে মাথায় করে বা গাড়িতে করে বাড়ি বা ধান মাড়ার খোলায় আনছেন। বসে থাকার সুযোগ নেই কৃষক পত্নীরও।তারাও ধান মাড়াইয়ের পরে পরিষ্কার করে ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।পাকা ধানের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।
বাদিয়াপাড়া গ্রামের ধান চাষি মতিয়ার রহমান বলেন,আমার ৩ বিঘা জমিতে ধান আছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর সময় ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকায় ছিলাম। আল্লাহর রহমতে তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। এবছর ধানের ফলন অনেক ভালো হবে। ধানের শীষে অনেক ধান রয়েছে।বিঘা প্রতি ১৯-২০ মণ হারে ফলন হবে আশা করছি।
বাওট গ্রামের ধানচাষি আঃ রশিদ বলেন,মাঠে চলতি বছর খুব ভালো ধান হয়েছে।ঝড় নিয়ে ভয় ছিল তা আর নেই।বর্তমানে বাজার মূল্য ৯০০-১০০০ টাকা। আশা করছি ধানে ভালো দাম পাব আর লাভ হবে।অনেকে ধান কাটতেও শুরু করেছে।
করমদিগ্রামের ধান চাষি হাসান আলি জানান,চলতি মৌসুমে ধানের আবাদ করতে গিয়ে অনেক খরচ বেড়ে গেছে শার ডিজেল কি করছো সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।মাঠে এবার ভালো ধান হয়েছে।দাম ভালো থাকলে আশা করছি লাভ হবে।তাছাড়া জমিতে ফসল ভালো ও লাভ হলে খরচের কথা আর মনে থাকে না।
দেবীপুর গ্রামের ধান চাষি দেলোয়ার হোসেন বলেন,এবছর ধানের আাবাদ করতে গিয়ে অনেক কষ্ট পোহাতে হয়েছে।একদিকে অনাবৃষ্টি অপরদিকে সার,ডিজেল,মজুরি সহ সবকিছুর খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে।ধানে সেচ দিতে দিতে হাঁপিয়ে উঠেছিলাম।ধান কাটতে শুরু করেছি। আশা করছি ধানে ফলন অনেক ভালো হবে।বিঘা প্রতি ১৮-২০ মণ হারে হবে।ভালো দাম পেলে লোকসান গুনতে হবে না।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়,চলতি মৌসুমে উপজেলায় আমন ধান রোপণ করা রয়েছে ১৩ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে।আশা করা হচ্ছে এবার ধানে ভালো ফলন হবে।দাম ভালো পেলে কৃষকরা লাভবান হবে।চাষিদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন জানান, এবছর উপজেলায় প্রায় ১৩ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। চলতি বছর উপজেলায় বিভিন্ন জাতের ধানের আবাদ হয়েছে।
ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। ধানের ফলনও ভালো হচ্ছে। সিত্রাং ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কিছু জমির ধান হেলে পড়লেও ফলনে তেমন কোন প্রভাব ফেলবে না। আশা করছি এবার ধানের ফলন ভালো হবে।আমরা আশাবাদী ১৩ হাজার ৬১০ হেক্টর রোপা আমন থেকে ৮২ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে।